নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৮ : ৩৫

জীবনের প্রথম যা কিছু তাই তো পয়লা! বৈশাখের পয়লা দিনে তারই স্মৃতিচারণে লগ্নজিতা চক্রবর্তী... 

প্রথম সব কিছু কী ভীষণ স্পেশ্যাল না? প্রথম ফাংশান করেছিলাম রবীন্দ্রসদনে। তখন আমার মাত্র চার বছর। প্রাক্তন স্পিকার প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে অনুশীলা বসুর গানের প্রতিষ্ঠানে গান শিখতাম। অত বাচ্চা মেয়ে রবীন্দ্রসদনে গাইছে, সেই সময় ঘটনাটা বেশ সাড়া ফেলেছিল। শুনেছি, আমি নাকি খুব প্রশংসিত হয়েছিলাম। কাগজে কাগজে খবর বেরিয়েছিল। দিন গড়িয়েছে। বড় হয়েছি। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘চতুষ্কোণ’ ছবিতে আমার প্রথম গান ‘বসন্ত এসে গেছে’ সদ্য মুক্তি পেয়েছে। তখনও এফএম রেডিওর রমরমা। আমাদের বাড়িতেও ছিল। মা-বাবা কাজে বেরিয়ে গিয়েছেন। আমি বাড়িতে একা। খবরের কাগজ বা পত্রিকা পড়ছি। হঠাৎ রেডিওয় চেনা প্রিলিউড! মন দিয়ে শুনে দেখি, আমারই গান বাজছে। একা বাড়িতে আনন্দে সেদিন আমার গায়ে কাঁটা দিয়েছিল! একই অনুভূতি প্রিমিয়ারে বসে ছবি দেখার সময়। যেই গানটা দেখানো শুরু হল পিছনে বসা অনুপম রায় আমার গায়ে কাগজের গোল্লা ছুড়ছেন! পিছনে ফিরতেই হাসিমুখে রসিকতা, ‘‘নিজের গান শুনতে কেমন লাগছে?’’

এরকম একা বাড়িতে আরও একটা মনে রাখার মতো ঘটনা ঘটেছিল। আমার প্রথম ঋতুস্রাব। কিশোরী থেকে নারী হওয়ার প্রথম ধাপ। বন্ধুরা ক্লাস সিক্স থেকেই ঋতুমতী। ফলে, বিষয়টি একেবারে অজানা নয়। বাড়ি থেকেও কিছু বোঝানো হয়েছিল। মনে আছে, সেদিন আমি কচি কলাপাতা রঙের ফ্রক পরেছিলাম। মা-বাবা যথারীতি কাজে। নিরুপায় আমি সেদিন বাবাকে প্রথম ডেকেছিলাম। কারণ, মা স্কুলশিক্ষিকা। চাইলেই বেরিয়ে আসতে পারতেন না। বাবা সেদিন তাঁর মেয়েকে সামলেছিলেন। 

এসবের পরেই আমি যেন হঠাৎ করে বড়। ক্লাস নাইনে পড়তে পড়তে ক্লাস ইলেভেনের একজনকে বেশ লাগল। ভালবাসা হয়েছিল কিনা জানি না। তবে খুব ভাল লাগত। এই ঘোর অবশ্য উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত স্থায়ী। কলেজে পা রেখে সত্যিকারের প্রেম। সাত্যকি সাহা, আমার বরের সঙ্গে। ওকেই প্রথম চুমু খেয়েছিলাম। চিউইংগাম বা সুগন্ধির প্রয়োজন পড়েনি সেদিন। এক অদ্ভুত ভাললাগা ছড়িয়ে পড়েছিল ঠোঁটে ঠোঁট রাখতেই। এই দিনগুলো কী করে ভুলতে পারি?